s স্বাবলম্বী বাংলাদেশ - তবে একলা চলরে: 2014

Aug 11, 2014

দেশী শিং ও মাগুর মাছের চাষ পদ্ধতি

দেশী শিং ও মাগুর মাছের চাষ পদ্ধতি


বাংলাদেশে শিং-মাগুর ও কৈ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর মাছ হিসেবে বহুল আলোচিত ও সমাদৃত। কিন্তু জলজ পরিবেশের আনুকূল্যের অভাব এবং অতিরিক্ত আহরণজনিত কারণে এসব মাছ অধুনা বিলুপ্তির পথে। এসব মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার্থে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা কার্যক্রম শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছে। ফলে এ জাতীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বারোদঘাটন হয়েছে।


শিং-মাগুর ও কৈ মাছ কোন চাষ করবঃ



  • এ মাছ অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু

  • অধিক সংখ্যক মাছ এক সঙ্গে চাষ করা যায়।

  • স্বল্প গভীর পানিতে নিরাপদে চাষ করা সম্ভব।

  • অন্যান্য মাছের তুলনায় এ মাছের চাহিদা ও বাজার মূল্য অনেক বেশি।

  • অতিরিক্ত শ্বাসনালী থাকায় বাতাস থেকে অঙিজেন নিয়ে এরা দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে। ফলে, জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায়।

  • কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবনের ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পোনা উৎপাদন সম্ভব।

  • রোগীর পথ্য হিসেবে এ মাছের চাহিদা ব্যাপক।


এ প্রেক্ষাপটে প্রথমে শিং মাছের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হলো-



শিং মাছঃ


আবাসস্থলঃ খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, পুকুর-দীঘি, ডোবানালা, প্লাবনভূমি ইত্যাদি। এঁদো, কর্দমাক্ত মাটি, গর্ত, গাছের গুঁড়ির তলা ইত্যাদি জায়গায় এরা সহজেই বসবাস করতে পারে। আগাছা, কচুরিপনা, পচা পাতা, ডালপালা ঘেরা জলাশয়ে বাস করতে এদের আদৌ কোন সমস্যা হয় না।
খাদ্য গ্রহণ প্রবণতাঃ রেণু পর্যায়ে আর্টেমিয়া, জু-প্লাঙ্কটন, ক্ষুদ্রজলজ পোকামাকড় ইত্যাদি। বায়োপ্রাপ্ত অবস্থায়- জলজ পোকা-মাকড়, ক্ষুদ্র চিংড়ি ও মাছ, ডেট্রিটাস পচনরত প্রাণিজ দ্রব্যাদি।


পরিপক্বতাঃ এ মাছ বছরে একবার প্রজনন করে থাকে এবং প্রথম বছরেই পরিপক্বতা অর্জন করে। প্রজননকাল মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস।
চাষ ব্যবস্থাপনাঃ ১.০ থেকে ১.৫ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট পুকুর এ মাছ চাষের জন্য উপযোগী। সম্ভব হলে পুকুরের পানি শুকিয়ে পাড় মেরামত করে নিতে হবে। পুকুরপ্রতি শতাংশে ১ কেজি চুন, ১০ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরে প্রতি শতাংশ ৪-৬ সেমি. দৈর্ঘ্যের সুস্থ-সবল ২০০ থেকে ২৫০টিপোনা মজুদ করা যেতে পারে।
সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ : চালের কুঁড়া শতকরা ৪০ ভাগ?তৈলবীজের খৈল ৩০ ভাগ ও শুঁটকি ৩০ ভাগ একত্রে মিশিয়ে গোলাকারে বল তৈরি করে মাছকে সবররাহ করতে হবে। এছাড়া শামুক-ঝিনুকের গোশতও মাছকে খাওয়ানো যেতে পারে।
খাদ্য প্রয়োগের মাত্রাঃ মজুদকৃত মাছের মোট ওজনের ৪-৫% হারে দৈনিক দুইবার খাদ্য প্রদান করতে হয়। যথাযথ পদ্ধতিতে পরিচর্যা করা সম্ভব হলে ৬-৮ মাসে শিং মাছ বাজারজাত করার উপযোগী সাইজে উন্নীত হয়ে থাকে।
সম্ভাব্য আয়ঃ এক চাষ মৌসুমে ব্যবস্থাপনা খরচ বাদে প্রতি শতাংশে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।



মাগুর মাছঃ


আবাসস্থলঃ খালবিল, হাওর-বাঁওড়, ডোবানালা, পুকুর, প্লাবনভূমি ইত্যাদি। এ মাছ এঁদো,
কর্দমাক্ত মাটি, গাছের গুঁড়ির তলা, গর্ত ইত্যাদি জায়গায় বসবাস করতে পছন্দ করে। স্রোতহীন আবদ্ধ পানিতে এদের সচরাচর দেখা যায়। কচুরিপানা, পচাপাতা আগাছ বেষ্টিত জায়গায় এদের স্বচ্ছন্দে বসবাস লক্ষ্য করা যায়।
খাদ্য গ্রহণ প্রবণতাঃ এদের খাদ্য গ্রহণ প্রবণতা শিং মাছের মতোই।
পরিপক্বতাঃ এ মাছ বছরে একবার প্রজনন করে থাকে। প্রজননকালে মে থেকে আগস্ট মাস।
চাষ ব্যবস্থাপনাঃ ১.০ থেকে ১.৫ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট পুকুর এ মাছ চাষের জন্য উপযোগী, পুকুরের পানি শুকিয়ে পাড় মেরামত করে নিতে হবে। প্রতি শতাংশে ১ কেজি চুন, ১০ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করে পুকুর প্রস্তুতিপর্ব সম্পন্ন করতে হয়। ৪-৬ সেমি. দৈর্ঘ্যের সুস্থ-সবল পোনা পুকুরে মজুদ করা উত্তম। শতাংশপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০টি পোনা মজুদ করা যেতে পারে। শিং মাছের মতো মাগুর মাছকেও মাছের মোট ওজনের ৪-৫% হারে দৈনিক দুইবার খাবার সরবরাহ করতে হবে।


মাগুর মাছের খাবার হিসেবে শিং মাছের অনুরূপ উপকরণাদিসহ তৈরি সম্পূরক খাদ্য দৈনিক দু’বার যথারীতি প্রদান করতে হবে। যথা নিয়মে মাছের পরিচর্যা করা সম্ভব হলে ৮-১০ মাসেই মাগুর মাছ বাজারজাত করার উপযোগী সাইজে উন্নীত হয়ে থাকে।
সম্ভাব্য আয়ঃ এক চাষ মৌসুমে মাগুর মাছ চাষ করে ব্যবস্থাপনা খরচাদি বাদে শতাংশ প্রতি ১০০০ থেকে ১,৫০০ টাকা আয় করা সম্ভব।


সূত্র : কৃষি তথ্য সার্ভিস



দেশী শিং ও মাগুর মাছের চাষ পদ্ধতি

Jul 23, 2014

ভাঙছে পদ্মা কাঁদছে মানুষ !!

পদ্মাপাড়ের মানুষ কাঁদছেন আর বলছেন, ‘নদীর এ কূল ভাঙে ও কূল গড়ে এইতো নদীর খেলা। আমাগো কপাল প্রতি বছরই ভাঙে, আর গড়ে না।’ গতকাল দুপুরে রৌদ্রের তাপদাহে নিজের বসতভিটা থেকে নিজেদের থাকার ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় অশ্রুসিক্ত ছল ছল চোখে এমনটাই জানালেন দোহার উপজেলার নয়াবাড়ি ইউনিয়নের বাহ্রা স্কুলের দক্ষিণ পাশে সর্বনাশী পদ্মার ভাঙ্গনে নিঃস্ব আবদুস সালাম। এ বছরও পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দোহার উপজেলার নয়াবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মধ্যে অরঙ্গাবাদ, পানকুন্ডু, ধোয়াইর, বাহ্রা পদ্মা ভাঙনে প্রায় নিশ্চিহ্ন। গত বছর উপজেলার নয়াবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এবং বিলাশপুর ও সুতারপাড়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মায় ভিটেমাটি হারানো পূর্ব ধোয়াইর গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন জানান, এ বছরও প্রতিদিন পদ্মায় ভাঙনের ফলে পদ্মাপারের অসহায় পরিবারগুলো পাড়ি জমাচ্ছেন অনত্র্য। গত বছর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান পদ্মায় ভাঙন রোধে বাঁধ দেয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও বিগত সরকারের পাঁচ বছরের শাসনামলে তিনি তার অঙ্গিকার পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘এমনি করে সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু আমাগো ভাগ্য বদলায় না ভাই’। ভাঙনের শিকার হয়ে বসতবাড়িসহ ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব পরিবারগুলোর অসহায় চেহারাগুলোর দিকে তাকালেই চোখে পানি এসে যায়। সেই সঙ্গে রাস্তাঘাট, মসজিদ, মন্দির, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অনেক মূল্যবান স্থাপনা পদ্মার পেটে হারিয়ে গেছে ও এখনও যাচ্ছে। পদ্মা ভাঙন রোধ না করায় প্রতিদিনই দোহারের মাত্রচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বসতভিটা হারানো বৃদ্ধা জমিলা খাতুন বলেন ‘সবাই শুধু নির্বাচন আইলে পদ্মায় বাঁধ দিবার কতা কইয়া আমগো কাছে ভোট চায়। কিন্তু পাস করলি আর খবর লও না বাপ। তুমরা কাগজে লিখা আর কি করবা, আমগো ভাগ্য লিখনতো আর বদলাতি পারবা না।’
গত ১২/১৫ দিন যাবত পদ্মায় পানি বাড়ার ফলে বাহ্রা স্কুলের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বেশ কিছু বাড়ি ঘর ভেঙে গেছে। আর সেখানে অবস্থানরত অনেকেই অন্যত্র সরে গেছেন। আবার কেউ কেউ কিছু দিনের মধ্যে ভাঙনের সম্ভাবনা থাকায় বসত ঘর ভেঙে অনত্র্য যাওয়ার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছেন। তাই খোলা আকাশের নিচে প্রখর রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলছে তাদের মানবেতর জীবনযাপন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত দুই বছর যাবত উপজেলার এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এমপি, মন্ত্রীরা পদ্মায় ভাঙনের শিকার এই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে পদ্মা ভাঙ্গন রোধ করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। আর এ নিয়ে রয়েছে পদ্মাপাড়ের অসহায় মানুষের মনে নানা ক্ষোভ। বিগত সময় ক্ষমতাসীন দলের এমপি, মন্ত্রীরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন, যেসব এলাকার লোক পদ্মার ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে আজ নিঃস্ব তাদের জন্য সরকারিভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্প খোলা হবে এবং তাদেরকে স্থায়ীভাবে সরকারি জমি প্রদান করা হবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি শুধু প্রতিশ্রুতিই রয়ে গেছে। ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি পদ্মা ভাঙন কবলিত অসহায় মানুষের। পাশাপাশি পদ্মার ভাঙন রোধেও ব্যাপকভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা মওসুম শুরু হওয়ার আগেই পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এলাকাবাসী আরও অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। তার ওপর আবার এখানে প্রতিদিন রাতে বড় বড় এক একটি তেলের জাহাজ এসে ভিড় জমায়। ফলে এই বড় বড় জাহাজের চাপে এবং পানির প্রবল ধাক্কায় পদ্মাপাড়ের অনেক অংশই ভেঙে পড়ছে। তারা বলেন, এ ব্যাপারে আমরা জাহাজ মালিকদের কিছুই বলতে পারি না। এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে এসব জাহাজ এই স্থানে যেন না নিয়ে আসে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বর্ষা মওসুমের শুরুতেই যেভাবে পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে যদি দ্রুত এই ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয় তবে দ্রুত নয়াবাড়ি ইউনিয়নসহ কুসুমহাটি ইউনিয়নের বিশাল অংশ বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


Courtesy: Manab Zamin



ভাঙছে পদ্মা কাঁদছে মানুষ !!

Jul 21, 2014

আমরা কজন



আমরা কজন

Jul 19, 2014

বিষমুক্ত চাষ - সেক্স ফেরোমন ফাঁদ

সবজি চাষে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দিনাজপুর। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই এ জেলায় কৃষকরা বিষমুক্ত বেগুন আবাদ করছেন। পোকা সংক্রমন দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদের সাহায্যে বেগুন চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।


কৃষক তোফায়েল জানান, সেক্স ফেরোমন পদ্ধতিতে তিন বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে ব্যাপক সাফল্য বয়ে পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করায় ক্ষেতে পোকার আক্রমন হয়নি। বরং পেয়েছেন আশাতীত ফলন। আগামীতে আরো জমিতে একই পদ্ধতিতে বেগুন লাগাবেন।


তোফায়েলের সাফল্য দেখে জেলার অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে বেগুনসহ অন্যান্য সবজি চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।


সেক্স ফেরোমন ফাঁদের বিস্তারিত তুলে ধরে তোফায়েল জানান, জমির মধ্যে ছোট ছোট খুটি করা হয়েছে। তাতে প্লাস্টিকের বয়াম দু’পাশে কেটে ঝুলিয়ে রেখে তার মধ্যে দেয়া হয়েছে সাবান পানি। বয়ামের এই সাবান পানির গন্ধে স্ত্রী পোকাগুলো পুরুষ পোকাকে প্রজননের জন্য আহ্বান জানান। স্ত্রী-পুরুষ পোকাগুলো সে সময় বয়ামে প্রবেশ করলে মেশানো পানিতে পড়ে মারা যায়। এ কারনে এই বেগুনের ফসলি জমিতে স্প্রে করতে হচ্ছে না কীটনাশক।


জৈবিক বালাই দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদের সাহায্যে বিষমুক্ত বেগুন চাষে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ।


কৃষিবিদ আনোয়ারুল আলম জানিয়েছেন, এক সময়ের অনাবাদি পতিত এসব জমিতে বেগুন চাষ করে যেমন জেলায় সবজি উৎপাদন বাড়ছে। তেমনি উৎপাদিত হচ্ছে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই বিষমুক্ত সবজি। এক দিকে যেমন কম খরচে আবাদ করে কৃষকরা হচ্ছেন লাভবান। অন্যদিকে ক্রেতারা পাচ্ছেন বিষমুক্ত সবজি।


সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বসিয়ে বিষমুক্ত বেগুন চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তাই কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং বেগুনের ন্যায্য মূল্য পেলে এ অঞ্চলে বিষমুক্ত বেগুন চাষ করতে কৃষকরা আরও এগিয়ে আসবেন-এমনটাই প্রত্যাশা করছেন কৃষিবিদরা।


সুত্রঃ পরিবর্তন.কম



বিষমুক্ত চাষ - সেক্স ফেরোমন ফাঁদ

Jul 17, 2014

মানিকগঞ্জের কাঁচামরিচ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে

মানিকগঞ্জের কাঁচামরিচ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। রপ্তানিকারকরা এতে লাভবান হলেও উৎপাদনকারী মরিচচাষিরা লাভ গুনতে পারছেন না।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিস জানায়, জেলার শিবালয় ও হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয়। উর্বর মাটির কারণে এ অঞ্চলে মরিচের আবাদ হয় বেশি, ফলনও ভাল। কৃষকরা প্রতিদিনই ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বাজারে বিক্রি করছে। মরিচ বিক্রির জন্য শিবালয় উপজেলায় বরংগাইল ও হরিরামপুর উপজেলায় ঝিটকা এবং ঘিওর উপজেলার বাঠুইমুড়ি হাট বিখ্যাত। প্রতিদিন ওই তিনটি হাটে শত শত মণ মরিচ বিক্রি করে কৃষকরা। বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পাইকাররা এসব মরিচ অল্প দামে কিনে বাছাই করে ভালমানের মরিচ কাগজের বাক্সে প্যাকেটজাত করে। আর ওইসব প্যাকেটের শত শত মণ মরিচ ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে লন্ডন, দুবাই, মালয়েশিয়া, কুয়েত, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে চলে যায়। এছাড়া, মানিকগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ীরা মরিচ ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আরো চড়া দামে বিক্রি করছে। কৃষকরা জানান, বিদেশে এসব মরিচ চড়া দামে বিক্রি হলেও উৎপাদনকারী কৃষকরা এর ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। এক শ্রেণীর মুনাফা লোভী মধ্যস্বত্বভোগী কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে মরিচ কিনে নেয়। আর বিদেশে রপ্তানির বিষয়ে কৃষি বিভাগ কিংবা সরকারের সঠিক কোন নিয়মনীতি নেই।

শিবালয় উপজেলার কৃষক জালাল মিয়া জানান, লাভের আশায় প্রতি বছরই মরিচের চাষাবাদ বেশি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে ফলনও ভাল হচ্ছে। কিন্তু হাটে পাইকাররা সঠিক দাম দিয়ে মরিচ কিনছে না। এখান থেকে ৫০ টাকা কেজি কিনে তারা ঢাকায় বিক্রি করছে ১০০ টাকায়। তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে মরিচের একটা দাম নির্ধারণ করা হলে কৃষকরা সঠিক দাম পেতো। ঘিওরের রাধাকান্তপুর গ্রামের মুন্নাফ মোল্লা এ বছর এক বিঘা জমিতে মরিচের চারা রোপণ করেছেন। সাত মণ মরিচ বিক্রি করেছেন আট হাজার ৫০০ টাকায়।

হরিরামপুর উপজেলার কালোই গ্রামের আজাদুর রহমান জানান, এ বছর দুই বিঘা জমির মরিচ বিক্রি করেছেন। ফলন বেশি হয়েছে। দামও ভালো পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি।

বরঙ্গাইল মরিচের হাট থেকে প্রতিদিন সাত থেকে ৮ টন মরিচ বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানালেন হাটের আড়তদার মো. খোকন মিয়া। বললেন, এর একটা বড় অংশ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনিও মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য তিন টন মরিচ কিনেছেন।

মো. ফরমান শেখ নামের আরেক আড়তদার জানান, তিনি ৬০ টাকা কেজি দরে এক টন মরিচ কিনেছেন। সেই মরিচ পাঠাবেন কুয়েতে। এতে তার যাতায়াত ভাড়াসহ প্রতি কেজি মরিচে এক থেকে দুই টাকা লাভ হবে বলে জানান।

ব্যবসায়ী জসিম মিয়া জানান, জেলার ঘিওর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চলে উৎপাদিত বিন্দু জাতের মরিচের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ মরিচ বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বেশি পরিমাণ মরিচ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।



মানিকগঞ্জের কাঁচামরিচ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে

মরিচ যাচ্ছে বিদেশে

মানিকগঞ্জের কাঁচামরিচ দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। রপ্তানিকারকরা এতে লাভবান হলেও উৎপাদনকারী মরিচচাষিরা লাভ গুনতে পারছেন না।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিস জানায়, জেলার শিবালয় ও হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয়। উর্বর মাটির কারণে এ অঞ্চলে মরিচের আবাদ হয় বেশি, ফলনও ভাল। কৃষকরা প্রতিদিনই ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বাজারে বিক্রি করছে। মরিচ বিক্রির জন্য শিবালয় উপজেলায় বরংগাইল ও হরিরামপুর উপজেলায় ঝিটকা এবং ঘিওর উপজেলার বাঠুইমুড়ি হাট বিখ্যাত। প্রতিদিন ওই তিনটি হাটে শত শত মণ মরিচ বিক্রি করে কৃষকরা। বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পাইকাররা এসব মরিচ অল্প দামে কিনে বাছাই করে ভালমানের মরিচ কাগজের বাক্সে প্যাকেটজাত করে। আর ওইসব প্যাকেটের শত শত মণ মরিচ ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে লন্ডন, দুবাই, মালয়েশিয়া, কুয়েত, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে চলে যায়। এছাড়া, মানিকগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ীরা মরিচ ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আরো চড়া দামে বিক্রি করছে। কৃষকরা জানান, বিদেশে এসব মরিচ চড়া দামে বিক্রি হলেও উৎপাদনকারী কৃষকরা এর ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। এক শ্রেণীর মুনাফা লোভী মধ্যস্বত্বভোগী কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে মরিচ কিনে নেয়। আর বিদেশে রপ্তানির বিষয়ে কৃষি বিভাগ কিংবা সরকারের সঠিক কোন নিয়মনীতি নেই।

শিবালয় উপজেলার কৃষক জালাল মিয়া জানান, লাভের আশায় প্রতি বছরই মরিচের চাষাবাদ বেশি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে ফলনও ভাল হচ্ছে। কিন্তু হাটে পাইকাররা সঠিক দাম দিয়ে মরিচ কিনছে না। এখান থেকে ৫০ টাকা কেজি কিনে তারা ঢাকায় বিক্রি করছে ১০০ টাকায়। তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে মরিচের একটা দাম নির্ধারণ করা হলে কৃষকরা সঠিক দাম পেতো। ঘিওরের রাধাকান্তপুর গ্রামের মুন্নাফ মোল্লা এ বছর এক বিঘা জমিতে মরিচের চারা রোপণ করেছেন। সাত মণ মরিচ বিক্রি করেছেন আট হাজার ৫০০ টাকায়।

হরিরামপুর উপজেলার কালোই গ্রামের আজাদুর রহমান জানান, এ বছর দুই বিঘা জমির মরিচ বিক্রি করেছেন। ফলন বেশি হয়েছে। দামও ভালো পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি।

বরঙ্গাইল মরিচের হাট থেকে প্রতিদিন সাত থেকে ৮ টন মরিচ বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানালেন হাটের আড়তদার মো. খোকন মিয়া। বললেন, এর একটা বড় অংশ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনিও মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য তিন টন মরিচ কিনেছেন।

মো. ফরমান শেখ নামের আরেক আড়তদার জানান, তিনি ৬০ টাকা কেজি দরে এক টন মরিচ কিনেছেন। সেই মরিচ পাঠাবেন কুয়েতে। এতে তার যাতায়াত ভাড়াসহ প্রতি কেজি মরিচে এক থেকে দুই টাকা লাভ হবে বলে জানান।

ব্যবসায়ী জসিম মিয়া জানান, জেলার ঘিওর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চলে উৎপাদিত বিন্দু জাতের মরিচের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ মরিচ বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বেশি পরিমাণ মরিচ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।



মরিচ যাচ্ছে বিদেশে

বিদেশেও নরসিংদীর কলম্বো জাতের সুগন্ধি লেবু

দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এবার বিদেশেও নরসিংদীর ‘কলম্বো’ জাতের সুগন্ধি লেবু।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ৬০ হাজার ১৮০ কেজি লেবু রপ্তানি হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে এই পরিমাণ আরও বেশি। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাঁচ হাজার ৩০ কেজি ও মে মাসে চার হাজার ২৯০ কেজি লেবু রপ্তানি হয়েছে।

বিদেশে এক কেজি লেবু গড়ে দুই পাউন্ড দামে রপ্তানি হয়। আর স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় প্রতি হালি ১৫০-২০০ টাকা দরে।

মুকসেদ আলী আরও জানান, ইতালি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, নরওয়ে, ফিনল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭টি দেশেই নরসিংদীর কলম্বো লেবু রপ্তানি হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইইউর ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্ট ফুড রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের একটি দল নরসিংদীর শিবপুরের দত্তেরগাঁও ভিটিপাড়া এলাকায় এসেছিলেন এই লেবুর বাগান দেখতে।

স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে শিবপুর, রায়পুরা, মনোহরদী ও বেলাবতে বাণিজ্যিকভাবে কলম্বো লেবুর চাষ হয়। এসব উপজেলার ১৪৪ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় প্রায় এক হাজার লেবুর বাগান রয়েছে। আরও ৩৩০টি নতুন বাগান হচ্ছে। বর্তমানে ৯০০ চাষি পরিবারসহ ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক মিলিয়ে হাজার দশেক লোক লেবু চাষ ও ব্যবসায়ে জড়িত।

চাষিদের কথা: শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের দত্তেরগাঁও ভিটিপাড়া এলাকার লেবুচাষি খন্দকার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘২০০৩ সালে আমি যখন লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পাচ্ছিলাম না, তখন এলাকার এক আত্মীয়ের পরামর্শে এক বিঘা জমিতে লেবুর বাগান করি। বর্তমানে আমার পাঁচ বিঘা জমিতে চারটি বাগান রয়েছে। এসব বাগানে প্রতিবছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে ছয়-সাত লাখ টাকা লাভ হচ্ছে।’

রায়পুরা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাবুল চৌধুরী বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর আগে স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রথমে এক বিঘা জমিতে লেবুর বাগান করি। তুলনামূলক কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় পরবর্তী সময়ে লেবু বিক্রির টাকা দিয়ে পর্যায়ক্রমে ১৩ বিঘা জমি কিনে লেবু চাষ করছি। এতে খরচ পড়ে পাঁচ লাখ টাকার মতো, আর লাভ হয় ১৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ থেকে মোট সাতটি প্রতিষ্ঠান ইউরোপে এই লেবু রপ্তানি করে। এগুলো হলো: ফাহাদ ইন্টারন্যাশনাল, ফারদিন এন্টারপ্রাইজ, রহিম ট্রেড, আজিজ অ্যান্ড সন্স, ফিরোজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মরিসন এন্টারপ্রাইজ ও ইশতিয়ার ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল।

ফারদিন এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. আরিফ উল্লাহ বলেন, ‘নরসিংদীর কলম্বো জাতের এই লেবু রপ্তানি করে ভবিষ্যতে আরও বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারবো বলে আমার মনে হয়।’

রপ্তানি নিষিদ্ধ: রমজান উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিদেশে লেবু রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এতে ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল এক্সপোর্ট এমপায়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাব্যবস্থাপক মাসুম মিয়া।

গুণাগুণ: নরসিংদী সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আবদুল কাফি জানান, লেবু সাধারণত কয়েক জাতের হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে: জারা লেবু, কারনা লেবু, বড় লেবু, এলাচি লেবু, আসাম লেবু, কলম্বো লেবু, কাটা লেবু ইত্যাদি। লেবুর রসে প্রচুর ভিটামিন সি এবং অল্প পরিমাণে কোলস্টেরল সোডিয়াম, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম আছে। লেবু মানুষের শরীর বৃদ্ধিতে ও গঠনে বেশ কার্যকর।



বিদেশেও নরসিংদীর কলম্বো জাতের সুগন্ধি লেবু

হাঁস প্রতিপালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন আনিছার রহমান

নওগাঁ প্রতিনিধি :নওগাঁর আত্রাইয়ে হাঁস প্রতিপালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন দরিদ্র এক পরিবার। বর্তমানে হাঁস থেকে আয় দিয়ে স্বচ্ছলভাবে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। জানা যায়, উপজেলার বাঁকা গ্রামের আনিছার রহমান (৫০) দীর্ঘদিন থেকে দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। পরিবার পরিজন নিয়ে সংসারে প্রায় লেগেই থাকতো অভাবের অভিযোগ। শারীরিক সামর্থ না থাকায় শ্রম বিক্রিতেও তিনি ছিলেন অপারগ। তাই আজ থেকে বছর চারেক আগে তিনি শুরু করেন হাঁস প্রতিপালন ব্যবসা। প্রথমদিকে মাত্র কয়েকটি হাঁস প্রতিপালন করে তার ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা লালন করেন। এ থেকেই শুরু হয় তার আয়ের উৎস। প্রতিবছর হাঁসের বংশ বৃদ্ধি করে এখন তার খামারে রয়েছে প্রায় ৫শতাধিক হাঁস।আনিছার রহমান বলেন, এসব হাঁস প্রতিপালনে তার তেমন কোন ব্যয় হয় না। অথচ আয় হয় প্রচুর। প্রতিদিন সকালে এসব হাঁস রাস্তা সংলগ্ন জলাশয়ে নিয়ে গেলে নিজেদের আহার নিজেরাই খেয়ে থাকে। বাড়িতে খাবারের জন্য সামন্য কিছু ভূষি ও ব্যান্ডের জোগান দিলেই চলে। এ হাঁসগুলো ডিম দেয়া শুরু করলে লাগাতার ডিম দিতে থাকে। যে ডিম বিক্রি করেও তার প্রচুর আয় হয়। এ ছাড়াও হাঁস প্রতিপালন করে তিনি যথেষ্ট স্বাবলম্বী হয়েছেন।তিনি জানান, উন্নত জাতের হাঁস প্রতিপালন করতে পারলে তার ডিম বিক্রি করেও একটি পরিবার স্বচ্ছলভাবে চলতে পারবে। এ হাঁস প্রতিপালনে তিনি সরকারী কোন অনুদান পাননি। সরকারী পৃষ্টপোষকতা বা আর্থিক অনুদান পেলে তিনি আরও সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। তিনি মনে করেন বেকারত্বের অভিষাপ থেকে মুক্তি পেতে তার মত যদি আরও অনেকে এ হাঁস প্রতিপালন শুরু করেন। তাহলে একদিকে বিমোচন হবে দারিদ্রতা অপরদিকে তারা ফিরে পাবেন অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা। আর হাঁস প্রতিপালনে তেমন পুঁজিরও প্রয়োজন হয় না। অল্প টাকায় লাভজনক একটি পেশা হাঁস প্রতিপালনের পেশা।


সুত্র নিরাপদ নিউজ



হাঁস প্রতিপালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন আনিছার রহমান

মরিচ যাচ্ছে বিদেশে

মানিকগঞ্জের কাঁচামরিচ দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। রপ্তানিকারকরা এতে লাভবান হলেও উৎপাদনকারী মরিচচাষিরা লাভ গুনতে পারছেন না।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিস জানায়, জেলার শিবালয় ও হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয়। উর্বর মাটির কারণে এ অঞ্চলে মরিচের আবাদ হয় বেশি, ফলনও ভাল। কৃষকরা প্রতিদিনই ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বাজারে বিক্রি করছে। মরিচ বিক্রির জন্য শিবালয় উপজেলায় বরংগাইল ও হরিরামপুর উপজেলায় ঝিটকা এবং ঘিওর উপজেলার বাঠুইমুড়ি হাট বিখ্যাত। প্রতিদিন ওই তিনটি হাটে শত শত মণ মরিচ বিক্রি করে কৃষকরা। বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পাইকাররা এসব মরিচ অল্প দামে কিনে বাছাই করে ভালমানের মরিচ কাগজের বাক্সে প্যাকেটজাত করে। আর ওইসব প্যাকেটের শত শত মণ মরিচ ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে লন্ডন, দুবাই, মালয়েশিয়া, কুয়েত, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে চলে যায়। এছাড়া, মানিকগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ীরা মরিচ ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আরো চড়া দামে বিক্রি করছে। কৃষকরা জানান, বিদেশে এসব মরিচ চড়া দামে বিক্রি হলেও উৎপাদনকারী কৃষকরা এর ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। এক শ্রেণীর মুনাফা লোভী মধ্যস্বত্বভোগী কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে মরিচ কিনে নেয়। আর বিদেশে রপ্তানির বিষয়ে কৃষি বিভাগ কিংবা সরকারের সঠিক কোন নিয়মনীতি নেই।

শিবালয় উপজেলার কৃষক জালাল মিয়া জানান, লাভের আশায় প্রতি বছরই মরিচের চাষাবাদ বেশি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে ফলনও ভাল হচ্ছে। কিন্তু হাটে পাইকাররা সঠিক দাম দিয়ে মরিচ কিনছে না। এখান থেকে ৫০ টাকা কেজি কিনে তারা ঢাকায় বিক্রি করছে ১০০ টাকায়। তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে মরিচের একটা দাম নির্ধারণ করা হলে কৃষকরা সঠিক দাম পেতো। ঘিওরের রাধাকান্তপুর গ্রামের মুন্নাফ মোল্লা এ বছর এক বিঘা জমিতে মরিচের চারা রোপণ করেছেন। সাত মণ মরিচ বিক্রি করেছেন আট হাজার ৫০০ টাকায়।

হরিরামপুর উপজেলার কালোই গ্রামের আজাদুর রহমান জানান, এ বছর দুই বিঘা জমির মরিচ বিক্রি করেছেন। ফলন বেশি হয়েছে। দামও ভালো পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি।

বরঙ্গাইল মরিচের হাট থেকে প্রতিদিন সাত থেকে ৮ টন মরিচ বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানালেন হাটের আড়তদার মো. খোকন মিয়া। বললেন, এর একটা বড় অংশ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনিও মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য তিন টন মরিচ কিনেছেন।

মো. ফরমান শেখ নামের আরেক আড়তদার জানান, তিনি ৬০ টাকা কেজি দরে এক টন মরিচ কিনেছেন। সেই মরিচ পাঠাবেন কুয়েতে। এতে তার যাতায়াত ভাড়াসহ প্রতি কেজি মরিচে এক থেকে দুই টাকা লাভ হবে বলে জানান।

ব্যবসায়ী জসিম মিয়া জানান, জেলার ঘিওর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চলে উৎপাদিত বিন্দু জাতের মরিচের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ মরিচ বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বেশি পরিমাণ মরিচ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।



মরিচ যাচ্ছে বিদেশে

Mar 10, 2014

কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি

কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি
কৃষিবিদ মোঃ নিয়ামুল কবীর


কোয়েল পাখি দীর্ঘদিন ধরে জাপান, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডসহ আরও অনেক দেশে পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই পালন করা হচ্ছে এ পাখি। কেননা কোয়েলের মাংস একটি অন্যতম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে সর্বত্রই পরিচিত। কোয়েল পাখি সবচেয়ে ছোট আকারের পোলট্রি। আনুমানিক ৯০ দশকের গোড়ার দিকে এটি ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে। কোয়েল পালনে ভালো ফল পেতে হলে প্রথমেই এর বাচ্চা সতর্কতার সঙ্গে পালন করতে হবে। এজন্য কোয়েলের বাচ্চা তিন মাস পর্যন্ত খুবই যত্ন সহকারে বড় করতে হবে। বাংলাদেশে গরমের সময় প্রায় দুই সপ্তাহ এবং শীতের সময় তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত কোয়েল পাখিকে তাপ দিতে হয়। এতে বাচ্চা পাখির মৃত্যুহারও অনেক কম হয়। কোয়েল গৃহপালিত পাখির মধ্যে অন্যতম। কবুতরের চেয়ে একটু ছোট। এর জন্মস্থান জাপান হলেও বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পাখি পালনের সম্পূর্ণ উপযোগী। কোয়েল পালন সহজ, দাম বেশি ও লাভজনক। কবুতরের মতো কোয়েল পাখি শখ করে কিংবা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করা যায়।


কোয়েল পাখি পালনের সুবিধাঃ



  • কোয়েল আকৃতিতে ছোট বলে পালন করতে জায়গা কম লাগে। খাঁচায় পালন করা যায়। একটি মুরগির পরিবর্তে ছয় থেকে সাতটি কোয়েল পাখি পালন করা যায়।

  • অল্প পুঁজি লাগে, লাভ বেশি হয়।

  • খুব দ্রুত বড় হয়। ২৫ থেকে ২৬ দিন বয়সের কোয়েল খাওয়ার উপযোগী হয় এবং ওজন হয় ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম।

  • উৎপাদন খরচ কম ও বাজারে চাহিদা এবং দাম বেশি। এক জোড়া কোয়েলের বাচ্চার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

  • কোয়েল পালন করা সহজ, সবাই পালন করতে পারেন। ছয় থেকে আট সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। একটি ডিমের ওজন আট থেকে ১২ গ্রাম।

  • কোয়েল পালন করা সহজ, সবাই পালন করতে পারেন। ছয় থেকে আট সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। একটি ডিমের ওজন আট থেকে ১২ গ্রাম।

  • কোয়েল পালন করা সহজ, সবাই পালন করতে পারেন। ছয় থেকে আট সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। একটি ডিমের ওজন আট থেকে ১২ গ্রাম।


কোয়েল পাখির জাতঃ

পৃথিবীতে কোয়েলের ১৬টি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্রজাতি বাংলাদেশে দেখা যায়। তার একটি জাপানিজ কোয়েল আর অন্যটি হলো বব হোয়াইট কোয়েল (মাংস উৎপাদনকারী)। জাপানি কোয়েলের অনেক জাত ও উপজাত রয়েছে। ডিম উৎপাদনকারী কোয়েল হচ্ছে ফারাও, ব্রিটিশ রেঞ্জ, ইংলিশ হোয়াইট, ম্যানচুরিয়াল গোল্ডেন, বব হোয়াইট (আমেরিকা), হোয়াইট বেস্ট কোয়েল (ইন্ডিয়ান) ইত্যাদি। বর্তমানে এসব জাতের কোয়েল বাংলাদেশে পালন করা হচ্ছে।
বাসস্থানঃ

কোয়েল পাখি সাধারণত মেঝে ও খাঁচায় উভয়ভাবেই রেখে পালন করা যায়। বাচ্চা অবস্থায় প্রতিটি কোয়েলের জন্য খাঁচায় অনত ৭৫ থেকে ১০০ বর্গ সেন্টিমিটার হারে জায়গার প্রয়োজন হয়। বয়স্ক প্রতিটি কোয়েলের জন্য খাঁচায় ১৫০ বর্গ সেন্টিমিটার পরিমাণ জায়গা রাখার প্রয়োজন হয়। কোয়েলের ঘরে পর্যাপ্ত আলোবাতাসের প্রয়োজন হয়। সাধারণত দৈর্ঘ্য ১২০ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৬০ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ২৫ সেন্টিমিটার একটি খাঁচায় ৫০টি কোয়েল পালন করা যায়। প্লাস্টিকের খাঁচায় কোয়েল পালন করা সহজ। তিন সপ্তাহ বয়স পর্যন বাচ্চার খাঁচার মেঝের জালের ফাঁক হবে ৩দ্ধ৩ মিলিমিটার এবং বাড়ন ও পূর্ণবয়স্ক কোয়েলের মেঝের জালের ফাঁক হবে ৫দ্ধ৫ মিলিমিটার। খাঁচা তিন থেকে চারটি স্তরে করা যেতে পারে। কোয়েলের বাসা বন্য পশুপাখির নাগালের বাইরে রাখতে হবে। খাঁচায় খাদ্য ও পানির পাত্র থাকতে হবে। আমাদের দেশে সাধারণত তুষ, বালি, ছাই, কাঠের গুঁড়া এসব দিয়ে কোয়েলের মেঝের লিটার তৈরি করা হয়। অবস্থা দেখে কোয়েলের এ লিটার পরিবর্তন করতে হবে, যাতে কোনোভাবেই পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর না হয়। প্রথমেই পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি পুরু তুষ বিছিয়ে লিটার তৈরি করতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যেন লিটার ভেজা না হয়।
কোয়েলের খাদ্যঃ

কোয়েল পাখি যেসব খাদ্য থেকে পেয়ে থাকে, সেগুলো হলো_ গম ভাঙা, ভুট্টা, চালের কুঁড়া, শুকনো মাছের গুঁড়া, তিলের খৈল, সয়াবিনের খৈল, ঝিনুকের গুঁড়া ও লবণ। চার সপ্তাহ বয়স পর্যন কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধির জন্য ২৭ ক্রড প্রোটিন এবং ২ হাজার ৮০০ কিলোক্যালোরি/কেজি শক্তি দিতে হবে।
খাদ্য সরবরাহঃ

কোয়েল পাখিকে শুষ্ক গুঁড়া/ম্যাশ ফিড প্রদান করতে হবে। চার সপ্তাহ পর্যন প্রতিটি কোয়েল দিনে চার গ্রাম করে খাদ্য খায়। পঞ্চম সপ্তাহ বয়স থেকে দৈনিক প্রতিটি কোয়েল ২০ থেকে ২৫ গ্রাম খাদ্য খায়। একটি কোয়েলের বছরে খাদ্য লাগে আট কেজি। এদের খাদ্য রূপানর হার ৩:১।
স্বাস্থ্যসেবাঃ

খাদ্যের সঙ্গে সব সময় ০.২৫ ভাগ ভিটামিন মিনারেল প্রিমিঙ্ জিএস এবং ডিম পাড়াকালে ভিটামিন মিনারেল প্রিমিঙ্ এল দিতে হবে। প্রতি ১০০ কেজি খাদ্যে ২০০ মিলিমিটার করে প্রোপিয়নিক এসিড মেশাতে হবে। গরমের সময় প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম করে স্যালাইন এবং বেশি বৃষ্টির সময়ে প্রতি লিটার পানিতে এক গ্রাম করে কসুমিঙ্ প্লাস দিতে হবে।
খাঁচায় কোয়েল পালনঃ

কোয়েল পাখির ঘরে যাতে পর্যাপ্ত আলোবাতাস ঢোকে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। একটি খাঁচায় ৫০টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য অবশ্যই ১২০দ্ধ৬০দ্ধ৩০ সেন্টিমিটার আকারের খাঁচার প্রয়োজন হয়। খাঁচার দুই পাশে একদিকে খাবার পাত্র এবং অন্যদিকে পানির পাত্র দিতে হবে। কোয়েলের ডিম ফোটাতে চাইলে স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েল একত্রে রাখতে হবে।
ডিম ও বাচ্চা উৎপাদনঃ

ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে হলে তিনটি স্ত্রী কোয়েলের সঙ্গে একটি পুরুষ কোয়েল প্রজননের জন্য রাখতে হবে। কোয়েল কখনও কুঁচে হয় না বলে মুরগির নিচে বা ইনকিউবেটরে কোয়েলের ডিম ফোটানো যায়। ১৬ থেকে ১৮ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চা ফোটানো ও ডিম উৎপাদনের জন্য কোয়েলের ঘরে ১৬ ঘণ্টা আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।পূর্ণবয়স্ক কোয়েল থেকে বেশি ডিম পেতে হলে কোয়েলের পঞ্চম সপ্তাহ বয়সে ১২ ঘণ্টা, ষষ্ঠ সপ্তাহে ১৩ ঘণ্টা, সপ্তম সপ্তাহে ১৪ ঘণ্টা, অষ্টম সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা ও নবম সপ্তাহে ১৬ ঘণ্টা আলো দিতে হবে। তবে যতক্ষণ দিনের আলো থাকবে কৃত্রিম আলো ততক্ষণ দিতে হবে না। কৃত্রিম আলোর জন্য ১০০ বর্গফুট জায়গায় ৬০ ওয়াটের একটি বাল্ব যথেষ্ট।
কোয়েলের রোগঃ

কোয়েলের তেমন রোগবালাই হয় না। তবে কোয়েলের রক্ত আমাশয় হতে পারে। কোয়েলের রানীক্ষেত ও রক্ত আমাশয় প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে। কিন্তু এরা অংঢ়বৎমবষষঁং ভঁসরমধঃড়ৎ ছত্রাকের প্রতি সংবেদনশীল। তবে প্রতি ১০০ কেজি খাদ্যে ২০০ মিলিমিটার প্রোপিয়নিক এসিড মিশ্রিত করলে এ ছত্রাক দ্বারা খাদ্য আর সংক্রমিত হয় না।

লেখক : প্রোগ্রাম অফিসার (কৃষি), ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন।



কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি

Mar 3, 2014

গাভীর রোগব্যাধি ও তার প্রতিকার

গাভীর রোগব্যাধি ও তার প্রতিকার


গাভীর সাধারণ রোগব্যাধি ও তার প্রতিকার সম্পর্কিত তথ্য বর্ণনা করা হয়েছে আর্টিকেলটিতে। তথ্যঃ


গাভীর রোগ-ব্যাধি ও তার প্রতিকার

গৃহপালিত পশুর মধ্যে গাভী পালন কৃষিজীবি সমাজের এক দীর্ঘ কালের প্রাচীন ঐতিহ্য। আমাদের দেশে গাভী পালন এক সময় কেবল গ্রামের কৃষিজীবি পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু দুগ্ধ চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে তা গ্রামীণ কৃষিজীবীদের সীমানা চাড়িয়ে শহরের শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে বহুদিন আগেই। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দুগ্ধ খামার গড়ে উঠেছে এবং তা ক্রমেই সমপ্রসারিত হছে। এটা নিঃসন্দেহে শুভ লক্ষণ। ফরে উন্নত জাতের বাচুর প্রজনন এবং গাভীর যত্নের প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে। গাভী পালনে এর পরিচচর্যা এবং রোগ-ব্যাধি সম্পর্কেও সংশ্লিষ্ট দের সচেতনতা অপরিহার্য। নানা রকমের রোগে আক্রান্ত হতে পারে আপনার বাড়ি কিংবা খামারের পোষা গাভী। এসব রোগ এবং এর প্রতিকার বিষয়েই এবার আলোকপাত করা যাক।


ওলান পাকা বা Mastitis ওলান পাকা বা Mastitis


ওলান পাকা রোগঃ

নানা প্রকার রোগ-জীবাণু বা অন্য কোনো রাসায়নিক দ্রব্যের দ্বারা এ রোগের সৃষ্টি হয়।


লক্ষণ

ক) ওলান লাল হয়ে ওঠে এবং হাত দিয়ে স্পর্শ করলে গরম অনুভব হয়।

খ) ব্যাথার দরুণ গাভী ওলানে হাত দিতে দেয় না এবং দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।

গ) হলুদ বর্ণ দুধের সাথে ছানার মতো টুকরা বের হয়।

পুরনো রোগে দুধ কমে যায় এমনকি একেবারে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ওলান শুক্ত হয়ে যায়।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

প্রথমত আক্রান্ত পশুকে পরিস্কার জায়গায় রাখতে হবে। ওলানে জমে থাকা দুধ বের করে দিতে হবে। বাঁচের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে টিটিসাইফন দ্বারা বাঁচের মুখ পরিস্কার করে দিতে হবে।

১. ভেলুস ২০%

২. এ্যান্টিবায়েটিক

৩. ম্যাসটাইটিস টিউব ইত্যাদি।


পেট ফাঁপাঃ

সাধারণত গরহজমের জন্য গাভীর পেট ফেঁপে যায়। এছাড়া কিছু কিছু রোগের কারণেও পেট ফাঁপে।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

দানাদার খাদ্য বন্ধ করে দিতে হবে। শুধুমাত্র শুকনা খড় খেতে দেওয়া যেতে পারে।

১. নিওমেট্রিল

২. কারমিনেটিভ মিঙ্চার ইত্যাদি।


ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানাঃ

অনেক রোগের দরুন পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। তবে অস্ত্রর রোগ এদের মধ্যে অন্যতম। আক্রান্ত পশু দূর্বল হয়ে পড়ে।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১. সকেটিল পাউডার

২. স্টিনামিন ট্যাবলেট ইত্যাদি।


নিউমোনিয়াঃ

ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস, রাসায়নিক দ্রবাদি, ঠান্ডা ইত্যাদির কারণে পশুর নিউমোনিয়া হতে পারে।


লক্ষণ

ক) ঘনঘন নিঃশ্বাস এ রোগের প্রধান লক্ষণ।

খ) রোগের শেষ পর্যায়ে শ্বাসকষ্ট হয়

গ) শুল্ক কাশি হতে পারে।

ঘ) তীব্র রোগে জ্বর হয় এবং নাক দিয়ে সর্দি পড়ে।

ঙ) বুকের মধ্যে গরগর শব্দ হয়।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১। ভেলুসং ২০%

২। অ্যান্টিবায়টিক

৩। ক্লোরেটেট্রাসন

৪। টেরামাইসিন

৫। ভেটিবেনজামিন


কৃমি কৃমি


কৃমিঃ

কৃমি নানা জাতের ও নানা আকারের হয়ে থাকে। কৃমিতে আক্রান্ত পশুকে ঠিক মতো খাবার দিলেও তার স্বাস্থ্যের কোন উন্নতি হয় না। বরং দি দিন রোগা হতে থাকে।


লক্ষণ

ক) পশু দূর্বল হয়ে যায়

খ) খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দেয়

গ) হাড্ডিসার হয়ে যায়

ঘ) সময় সময় পায়খানা পাতলা হয়

ঙ) শরীরের ওজন কমে যায়

ছ) দুগ্ধবর্তী গাভীর দুধ কমে যায়

চ) রক্তশুণ্যতায় ভোগে বলে সহজেই অন্যান্য আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে।

জ) দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধি পায় না।

ঝ) ফলে পশুকে রোগা ও আকারে ছোট দেখায়


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

গোবর পরীক্ষান্তে কৃমিনাশক ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা করতে হবে।


লক্ষণ

প্রাথমিক অবস্থায়

ক) আক্রান্ত পশু কিছু খেতে চায় না

খ) হাটতে চায় না

গ) জিহবা বের হয়ে থাকে

ঘ) মাথা ও পায়ের মাংসপেশী কাপতে থাকে


পরবর্তী অবস্থায় আক্রান্ত গাভী

ক) বুকে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ে

খ) মাথা বাঁকিয়ে এক পাশে কাধের ওপর ফেলে রাখে

গ) এ অবস্থায় গাভী অনেকটা চৈতন্য হারিয়ে ফেলে

ঘ) গাভী কাত হয়ে শুয়ে পড়ে, উঠতে পারে না

ঙ) ধমনীর মাত্রা বেড়ে যায়

চ) অবশেষে গাভী মারা যায়


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

গাভীকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ক্যালসিয়াম ইনজেকশন দিতে পারলে দ্রুত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।


কিটোসিসঃ

দেহের মধ্যে শর্করা জাতীয় খাদ্যের বিপাকক্রিয়ার কোন প্রকার বিঘ্ন ঘটলে রক্তে এসিটোন বা কিটোন নামক বিষাক্ত দ্রব্য অধিক মাত্রায় জমা হয়ে দেহ বিষিয়ে তোলে। এই বিষক্রিয়ার ফলেই কিটোসিস রোগের সৃষ্টি হয়।


লক্ষণ

ক) ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়

খ) গাভীর দুধ কমে যায়

গ) দৈহিক ওজন কমে যায়

ঘ) কোষ্ঠাকাঠিন্য দেখা দেয়

ঙ) এছাড়া আক্রান্ত পশুর নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে এসিটোনের মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়

চ) অনেক সময় গাভী এক জায়গায় দাঁড়িয়ে চতুর্দিকে ঘোরে।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

অপটিকরটেনল-এস ইনজেকশন।


ফুল আটকে যাওয়াঃ

বাচ্চা প্রসবের পর অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফুল বের হয়ে আসে না। এবং এসব ক্ষেত্রে গর্ভ ফুলের অংশ বিশেষ বাইরের দিক হতে ঝুলে থাকতে দেখা যায়।


চিকিৎসা ও প্রতিকার

১। অকসিটোসিন

২। ইউটোসিল পেশারিস

৩। এ্যানটবায়েটিক ইনজেকশন ইত্যাদি।


জলুবায়ুর প্রদাহঃ

অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগের জীবাণূ যোনিপথ হতে জরায়ুতে পৌছে এ রোগ হতে পারে। গর্ভ ফুলের টুকরা ভেতরে থেকে গেলে পচে যায় এবং প্রদাহের কারণ ঘটায়। কামপর্বে পশুর যৌন-ক্রিয়ার সয়ও অনেক সময় জরায়ুতে রোগ জীবানূ সংক্রমিত হয়ে থাকে।


লক্ষণ

ক) জ্বর হয়

খ) দুর্গন্ধযুক্ত জলের মতো কিংবা কালচে লাল রঙের স্রাব পড়তে দেখা যায়

গ) খাদ্যে অরুচি হয়

ঘ) দুধ কমে যায়

ঙ) গাভী পাল রাখে না


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১। ইউটোলিস পেরারিস

২। এ্যান্টিবায়েটিক ইনজেকশন ইত্যাদি


গর্ভপাতঃ

সাধারণত রোগ-জীবানুর কারণেই অধিকাংশ গর্ভপাত হয়ে থাকে। এছাড়া আঘাত, বিষক্রিয়া, পক্ষাঘাত ইত্যাদি কারণেও গর্ভপাত হতে পারে।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১। ইউটোসিল পেশারিশ

২। এ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন ইত্যাদি।


অনুর্বরতা ও সাময়িক বন্ধ্যাত্বঃ

সাধারণত প্রজনন ইন্দ্রিয়সমূহের বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি, হরমোন ক্ষরণের অনিয়ম, অসমতা, ওভারিতে সিস্ট ও পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি কারণে সাময়িক বন্ধ্যাত্ব রোগ হয়ে থাকে।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

সঠিক কারণ নির্ধারণ করে হরমোন দ্বাা চিকিৎসা করলে সাময়িক বন্ধ্যাত্ব দূর হয়। যৌননালীর অসুখের দরুন বন্ধ্যাত্ব হলে ইউটোলিস পেশারিস, স্টিমাভেট ট্যাবলেট জরায়ুতে স্থাপন করতে হবে। ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত সুষম পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।


খুরো বা খুর পচাঃ

খুরের ভিতরের বা চারপাশের টিস্যু পচনশীল অবস্থাকে ফুটরট বলে।


লক্ষণ

ক) আঘাতপ্রাপ্ত টিস্যুতে পচন যুক্ত ঘা হয়

খ) আশপাশের টিস্যুতে রক্ত জমা হতে দেখা যায়

গ) পশু খুড়িয়ে হাঁটে এবং কিছু খেতে চায় না

ঘ) পশুর ওজন ও দুধ কমে যায়

ঙ) শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১। ভেসাডিন

২। ভেসুলাং ২০% ইনজেকশন

৩। এ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন

৪। ক্ষতস্থান ভালভাবে পরিস্কার করে দিনে ২ বার ডাস্টিং পাউডার ব্যবহার করতে হবে।


ককসিডিওসিস বা রক্ত আমাশয়ঃ

রক্ত মিশানো পাতলা পায়খানা, রক্ত শূণ্যতা ও শরীরের দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্তি এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য।


লক্ষণ

ক) শরীরের তাপমাত্রা অল্প বৃদ্ধি পায়

খ) হঠাৎ করে পায়খানা শুরু হয়

গ) পায়খানার সময় ঘন ঘন কোথ দেয়

ঘ) পায়খানা খুবই দুগর্ন্ধযুক্ত

ঙ) আক্রান্ত পশু দিন দিন দূর্বল হতে থাকে

চ) মলের সাথে মিউকাস অথবা চাকা চাকা রক্ত থাকে

ছ) খেতে চায় না

জ) শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১। ভেলুসং ২০% ইনজেকশন

২। সকেটিল পাaaউডার ইত্যাদি


বেবিসিয়াসিস বা রক্ত প্রস্রাবঃ

আটালি দ্বারা এ রোগের জীবাণূ সংক্রামিত হয়।


লক্ষণ

ক) হঠাৎ জ্বর (১০৮ ডিগ্রী ফা.) হয়

খ) জাবর কাটা বন্ধ করে দেয়

গ) রক্তের সঙ্গে লোহিত কাণিকা ডাঙ্গা হিমোব্লোবিন যুক্ত হবে প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে আসে।

ঘ) প্রস্রাবের রঙ লাল হয়।


প্রতিকার ও চিকিৎসাঃ

১। বেরিনিণ ইনজেকশন

২। শরীরের আটালিমুক্ত করার জন্য নেগুভন সপ্রে অথবা আসানটল সপ্রে দিতে হবে।


উকুন/আটালি

এরা এক প্রকার বহিঃ পরজীবী। অধিকাংশ গবাদি পশু উকুন/ আটালি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে।


চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

১। নিওসিডল ৪০ ডবি্লউ-পি

২। আসানটল

৩। নেগুভন স্প্রে ইত্যাদি মিশিয়ে পশুর গায়ের স্প্রে করতে হবে।

তথ্য সূত্র: শাইখ সিরাজ রচিত ‘মাটি ও মানুষের চাষবাস’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহীত



গাভীর রোগব্যাধি ও তার প্রতিকার

Feb 22, 2014

রাজহাঁস পালন ও তার পরিচর্যা

রাজহাঁস পালন ও তার পরিচর্যা


কিছু গৃহপালিত পাখি আছে যাদের নিয়ে সরকারি, বেসরকারিভাবে বেশ ঢাক-ঢোল পেটানো হয় তার সুখ্যাতির ও গুণাগুণের জন্য।’মানুষ ও কাকে নিয়ে গেল কান’ শুনেই নিজের কানে হাত না দিয়ে কাকের পেছনে ছুটলো। ফলে কান যেখান থাকবার সেখানেই রইলো। শুধু কাকই যা পালিয়ে গেলো।

আবার কিছু কিছু পশুপাখি আছে যাদের সম্পর্কে সরকার সব সময় মুখ ঘুরিয়ে থাকে। পিঠে নিয়েছি কুলো। যা করবার করো!” ভাব নিয়ে মুখ গোমড়া করে থাকে। কিন্তু ঐ সব উপকারী গৃহপালিত পশুপাখি কারোর তোয়াক্কা না করে ঠিক নিজের কাজ করে যায়। রাজ হাঁস এই ধরনের একটি পাখি।


এ জাতের রাজ হাসে ও আমাদের দেশে খুবই প্রচলিত।রাজহাঁসের সেবামূলক কাজ

কবি বলেছেন- ”কোথায় জলে মরাল চলে। মরালী তার পাছে রে-” রাজহাঁস শুধু শোভাবর্ধন করে না। বাড়ি-ঘর পাহারা দেয়, চোর তাড়ায়। ঘাস কাটার মেশিনের বদলে রাজহাঁস পুষুন, ঘাস সমান করে খেয়ে নেবে।

পোকা-মাকড় খেয়ে জায়গা-জমি ঝকঝকে, তকতকে করে রেখে দেবে।রাজহাঁসের মাংস খাওয়া হয়। ওর পলক দিয়ে লেপ-তোষক, বালিশ তৈরি হয়।ডিম? বছরে খুব কম ডিম দেয়। এই কারণে রাজহাঁস পালনকারী তার ডিম না খেয়ে সেটা থেকে বাচ্চা পয়দা করতেই বেশি উৎসাহী হয়ে থাকেন।


রাজহাঁসের প্রজাতি

রাজহাঁসের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে নিম্ন লিখিত প্রজাতিগুলো সাধারণত দেখা যায়।


টুলুজ


(১) টুলুজ- ভারি প্রজাতির পাখি। ফরাসী দেশের পাখি। ভারি পাখিদের মধ্যে এরাই বেশি ডিম দেয়।তবে সব টুলুজ পাখি ডিমে তা দেয় না। ঠোঁট , পা কমলা রঙের। গলা, পেট এবং লেজ সাদা। পুরুষের ওজন- ১৪ কেজি, স্ত্রী- ৯ কেজি।


এমডেন


(২) এমডেনঃ জামর্নির হ্যানোভারে এই পাখি বেশি দেখতে পাওয়া যায়। ভারি জাতের পাখি। ডিমের সংখ্যা ভালো। অন্য প্রজাতির রাজহাঁস থেকে বেশ ঠান্ডা। ঠোঁট জ্বলজ্বলে কমলা রঙের। পায়ে ধবধবে সাদা পালকে ভরা। পুরুষের ওজন ১৪ কেজি, স্ত্রী ৯ কেজি।


                         চিনা


(৩) চিনাঃ চিনদেশের রাজহাঁস। টুলুজ এবং এমডেন ছাড়া আকারে ছোট। সংখ্যায় বেশি ডিম দেয়। বছরে ৬০ টির মত। ডিমে তা দিতে অভ্যস্ত। দুটি রংয়ের চিনা রাজহাঁস দেখা যায়। খয়েরি এবং সাদা।খয়েরি রঙা চিনা রাজহাঁসের পা কমলা। ঠোঁট, পালকের রঙও খয়েরি। সাদা রঙের রাজহাঁসের ঠোঁট এবং পা উজ্জ্বল কমলা রঙের। গায়ের পালক ধবধবে সাদা।

ওপরের ঠোঁটের গোড়ার চামড়া ফুলের মতো গোল হয়ে থাকে। পুরুষের ওজন ৯ কেজি, নারীর ওজন ৮ কেজি। পাহারাদার হিসেবে চিনা রাজহাঁসের সুখ্যাতি আছে।

এছাড়া আরো কিছু প্রজাতির রাজহাঁস আছে। যেমন আফ্রিকান। অনুমান করা হয় এরা আদিতে ভারতীয়। কেউ বা বলেন চিনা এবং টুলুজের মধ্যে প্রজননের ফলে এদের সৃষ্টি হয়েছিল।


রাজহাঁসের বাসস্থান

রাজহাসের ঘর খোলা-মেলা, বায়ু চলাচলযুক্ত কিন্তু রোদ – বৃষ্টিতে ওদের কষ্ট দেবে না। মেঝে নানা ধরনের হতে পারে- পাকা, শক্ত অথচ কাঁচা ; মোটা তারের জালের এবং বিছানাযুক্ত (লিটার)। পুরুস্তরের বিছানা (ডিপ লিটার) হলে গভীরতা হবে ১৫ সে. মি. বা ৬ ইঞ্চি। বিছানা সবসময় শুকণো থাকা চাই।

ঘরের রক্ষণব্যবস্থা ভালো হওয়া চাই। অর্থাৎ যাতে চোর না ঢোকে। শেয়াল বা অন্য কোন বন্যপ্রানী এদের ক্ষতি না করে।

ঘরের সামনে বা পিছনে কিছুটা জায়গা তারের জাল দিয়ে ঘিরে দিলে ভাল হয়। এই জায়গাটা ওদের বিচরনের (জঁহ)কাজে আসবে। এই ধরনের জায়গা হাঁস পিছু ৪ বর্গ মিটার দিতে হবে।

রাজহাঁসের ঘরের মধ্যে এবং বাইরে তিনটি হাঁস পিছু একটি করে ডিম পাড়ার বাক্স দিতে হবে। বাক্সে মাপ হবে ৫০ বর্গ সেঃ মিঃ। পানি ও খাবার জন্য আলাদা পাত্র দিতে হবে।

রাজহাঁসের প্রজনন করাতে চাইলে পদ্ধতিগতভাবে এগুতে হবে। যেমন- ভারি জাতের ৩/৪ টি মাদি হাঁস পিছু একটি মর্দা হাঁস রাখতে হবে। চিনে হাঁসের ৪/৫টি মাদির পিছু একটি মর্দ হাঁস রাখতে হবে।

রাজহাঁসদের এক বছর বয়স না হলে প্রজনন কাজে ব্যবহার না করাই ভাল।সবচেয়ে ভাল হয় যদি ওদের দু’বছর বয়সে প্রজনন কাজে লাগানো যায়।

মার্দি হাঁস ১৫ বছর পর্যন্ত প্রজননক্ষম থাকে কিন্তু মর্দা সাত বছরে প্রজননে কিছুটা বা অক্ষম হয়ে পড়ে।


ডিম ও ডিম ফোটানো

সাধারনত এরা বসন্ত কালে ডিম দিতে শুরু করে। চিনে রাজহাঁস শুরু করে শীতকালে। এরা সকালের দিকেই ডিম দেয়। প্রথম বছরের তুলনায় এরা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে বেশি ডিম দিয়ে থাকে ২য় এবং তয় বছরের ডিম আকারে ও বেশ বড় হয়ে থাকে।শঙ্কর জাতীয় রাজহাঁস অর্থাৎ অক্সিকান রাজহাঁস বা চিনে এবং টুলুজ বা এমডেনের যৌন সঙ্গমে তৈরি সঙ্কর রাজহাঁস এমডেন বা টুলুজ চিনে রাজহাঁসদের চেয়ে বেশি ডিম দেবে।


ডিমে তা দেওয়া

রাজহাঁস নিজের ডিম ফুটিয়ে থাকে। এবং যখন ডিমে তা দেয় তখন ডিম পাড়া বন্ধ রাখে। সুবিধা থাকলে আপনি টার্কি মুরগি, বা মস্কোডি হাঁস দিয়ে রাজহাঁসের ডিম ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে পারেন।

টাটকা ডিম ( খুব জোর সাত দিনের পুরানো), পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, কোন ফাটাফুটো নেই এবং প্রতিটি ডিমের ১৪০ – ২০০ গ্রাম ওজন হলে সেটা তা দেবার উপযুক্ত বলে ধরা যেতে পারে।

অনেক জায়গায় মুরগি দিয়েও রাজহাঁসের ডিম ফোটানো হয়ে থাকে। যদি মুরগি দিয়ে রাজহাঁসের ডিম ফোটাতে হয় তবে মুরগি প্রতি ৪/৬ টি ডিম এবং রাজহাঁস দিয়ে বসালে রাজহাঁস পিছু ১০-১৫ টি ডিম বসাতে হবে। মুরগির নিচে যদি রাজহাঁসের ডিম বসানো হয় তবে ডিম ঘোরানোর ব্যবস্থা খামারকারীকে নিজেই করতে হবে। কারন ডিম বড় আকারের বলে মুরগি রাজহাঁসের ডিম ঘোরাতে পারে না।

মুরগি যখন খাবার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে যাবে তখনই ডিম ঘুরিয়ে দিতে হবে। প্রতিদিনই নিজে থেকে এই কাজ করতে হবে। ১৫ দিনের ডিম ঘোরানোর সময় কিছুটা গরম পানি ডিমের গায়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। অবশ্য রাজহাঁসের পানিতে বিচরণ করার সুবিধা থাকলে গরম পানি না ছিটিয়ে দিলে ও চলবে।


কৃত্রিম ডিম ফোটানো

ডিম ফোটানো মেশিনে ( ইনকিউবেটার) ডিম ফোটানোর হার বেশ কম। মাত্র শতকরা ৪০ ভাগ। মেশিনে ডিম বসালে তাপমাত্রা সবসময় ৩৭.৪০ সেঃ (৯৯.৫০ ফাঃ) রাখবেন। ভেজা থার্মোমিটারে তাপ রাখতে হবে ৩২.২০ সেঃ ২৯ দিন পর্যন্ত। তারপর একে বাড়িয়ে করতে হবে ৩৪০ সেঃ। ডিমগুলি দিনে বার বার ঘুরিয়ে দিতে হবে। আর সব পাখির বেলায় যেটা চলে, এখানে ও তাই _ ডিমের মোটা দিকটা ওপরে রেখে দিতে হবে।

দশ দিনের পরের থেকে ডিমগুলিকে গরম পানি সপ্রে করে দিতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন করে। ২৬ দিনের ডিমগুলিকে নার্সারি ট্রে বা পালক ট্রেতে নিয়ে যেতে হবে। ২৮ দিন হাল্কা জাতের রাজহাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে যায়। আবার এটাও দেখা গেছে ভারি জাতের রাজহাঁসের ডিম ফুটতে ৩৫ দিন সময় লাগছে। ডিম বসানোর দশ দিনের দিন আলোর সামনে ডিম ঘুরিয়ে ঝুঝে নেওয়া যায় ভ্রূণ হয়েছে রাজহাঁসের একদিনের বাচ্চার লিঙ্গ নির্ণয়ঃ মুরগির বাচ্চার মতো রাজহাঁসের বাচ্চার ও একদিনে বলে দেওয়া যায় কোনটা মাদি আর কোনটা মদ্দা।


রাজ হাঁস এর বাচ্চা প্রতিপালনরাজহাঁসের বাচ্চা প্রতিপালন

যদি মুরগি বা রাজহাঁস ডিমে তা দিয়ে ডিম ফুটিয়ে থাকে তবে সেই পালিকা মুরগি বা রাজহাঁস ডিম ফোটা বাচ্চাদের যত্ন করবে। সেখানে কৃত্রিম তাপের কোনো দরকার পড়বে না। তবে পালিকা মা বাচ্চা নিয়ে যে জায়গায় ঘুরে বেড়াবে সে জায়গাটা অবশ্যই শুকনো খটখটে হওয়া চাই।

তবে দশদিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চাসহ পালিকা মাকে নরম ঘাসে ছাওয়া উঠোন জাতীয় জায়গায় রাখা উচিত। লনের মাপ হবে ১০ টি বাচ্চার জন্য পালিকা মা সহ ৪ বর্গমিটার । ১৫ দিন বয়স না হলে বাচ্চাদের পানিতে নামনো মুক্তিযুক্তি নয়।

যদি ইনকিউবেটর মেশিনে ডিম ফোটানো হয় তবে রু্রডারের নিচে রেখে অবশ্যই বাচ্চাদের কৃত্রিমভবে তাপ দিতে হবে।

প্রথম সপ্তাহে ব্রুডারের নিচে ৩০ ডি. সেঃ তাপ থাকা উচিত। সপ্তাহ পিছু ৫ ডি. সেঃ তাপ কমিয়ে ঘরের তাপে অর্থাৎ পরিবেশের তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে।

প্রথম তিনদিন বাচ্চাদের ধরে খাওয়াতে হবে। তারপর থেকে এরা নিজেরাই খেতে পারবে। বাচ্চারা সহজে ঘাসে চড়ে খেতে পারে। ফলে তৈরি খাবার কম লাগে। একসঙ্গে একটি দলে ১০০ টির বেশি বাচ্চা পালন না করাই উচিত।


রাজ হাঁস এর বাচ্চাদের খাবার।রাজহাঁসের বাচ্চাদের খাবার

রাজহাঁসের খাবার মোটামুটি হাঁসের খাবারের মতো। তবে প্রথমে চার সপ্তাহ রাজহাঁসের বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে বলে বাচ্চা হাঁসের তুলনায় ওদের খাবারে আমিষের ভাগ বেশি হওয়া দরকার। ভারি জাতের রাজহাঁসের একদিনের বাচ্চার ওজন প্রায় ৮৫ গ্রাম। এবং ৪ সপ্তাহে এর ওজন ১ কেজি ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত।

তাই রাজহাঁসের বাচ্চার প্রথম চার সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত শতকরা ২০ ভাগ আমিষ আছে এমন খাবার এবং অতিরিক্ত নরম কিছু সব্জি বা চরবার ঘাসে ছাওয়া উঠোন দরকার। ৪ সপ্তাহ পরে ১৬% আমিষ যুক্ত খাবার দিলে চলবে।

ঘাসের চারণভুমিতে রাজহাঁসের বাচ্চা ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত ৯ কেজি। খাবার খেয়ে থাকে। ঐ বয়সে খাবারকে মাংসে পরিণত করার হার ২.২ কেজি। খাবার পিছু ১ কেজি মাংস। ১৬ সপ্তাহে ওটা দাঁড়ায় ৩ কেজি। খাবার পিছু ২.১ কেজি মাংস।


প্রজননক্ষম রাজহাঁসের যত্নঃ প্রাপ্তবয়স্ক রাজহাঁসদের প্রজনন ঋতুর আগে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো ভাবে ঘাসে চরতে দিতে হবে। ওদের এই সময় প্রতিদিন ১৬৫ গ্রাম সুষম খাদ্য খেতে দিতে হবে যাতে আমিষের ভাগ থাকবে শতকরা ১৬ ভাগ।


রাজহাঁসের রোগঃ রাজহাঁসের পালন তথা ব্যবসায় এটা একটা মস্ত সুবিধা যে এদের তেমন রোগ-ব্যধি হয় না। রোগের মড়ক নেই বললেই চলে। বাজারে বিক্রি করার বয়স পর্যন্ত মৃতু্যর হার শতকরা ২ ভাগ নয়।

তবে রাজহাঁস পালনে এ সমস্ত রোগের সম্বন্ধে সচেতন হওয়া উচিত _ ককসিডিও _ সিস, কলেরা, কোরাইজ, স্পাইরোকিটোসিস, অপুষ্টিজনিত রোগ।


মানুষের সেবায় রাজহাঁস- পাহারাদিরঃ রাজহাঁস তার পারিপার্শ্বিক প্রতিটি জিনিসের সঙ্গে খুব সহজেই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে এবং সেই সুবাদে যে কোন অপরিচিতি শব্দ, লোকজন, জন্তু, জানোয়ার দেখামাত্র হয়ে পড়ে এবং প্যাঁক-প্যাঁক শব্দ করে আশ পাশের সকলকে তটস্থ করে তোলে। এমনকি প্রবল উত্তেজনায় অনেক সময় আক্রমন পর্যন্ত করে বসে। আগেই বলা হয়েছে সব রাজহাঁসের মধ্যে পাহারাদারি কাজে চীনা রাজহাঁস দক্ষতম।


রাজহাঁসের ডিম এবং মাংস

অনেক দেশে এমন কি আমাদের দেশে ও কিছু কিছু জায়গায় রাজহাঁসের মাংস ও ডিম উপাদেয় খাবার হিসাবে আদর পেয়ে থাকে। ১০ সপ্তাহ বয়সে রাজহাঁস মাংস হিসেবে খাওয়া চলে।এবং সেই সময় ঐ মাংসের ব্যবসা ও ভালো চলে। দশ সপ্তাহ বয়সে রাজহাঁসের ওজন ৪.৫ কেজি হয়।মাংস হিসেবে কাটার আগে রাজহাঁসের পানি ছাড়া সবরকম খাবার খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা আগে। মুরগি কাটার কায়দায় এবং সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রাজহাঁসের জুগুলোর শিরা কেটে দেওয়া হয়। সম্পূর্ন রক্ত বের হয়ে যাবার পর ওর পেট চিরে নাড়িভূড়ি বের করে নেওয়া হয়। পা, মাথা, ঠোঁট, কেটে বাদ দেওয়া হয়। মোটামুটি রাজহাঁস পিছু পালক,মাথা, নাড়ি ভুঁড়ি বাদ দিলে তার দেহের ওনের শতকরা ৭০ ভাগ মাংস পাওয়া যায়।


রাজহাঁসের পালক বিক্রয়

রাজহাঁসের পালক দিয়ে গদি, লেপ, তোষক, তাকিয়া, কুশন এককথায় বসবার এবং হেলান দেবার সব জিনিস তৈরি করা যায়। এই গদিফাদি তৈরির জন্য রাজহাঁসের বুক পিঠ এবং পেটের নরম পালকের খুব চাহিদা।

রাজহাঁসের পালক চাইলে পালক তুলতে হবে রাজহাঁস যখন প্রথম ডিম পাড়া বন্ধ করবে। বছরে তিন থেকে চারবার এই পালক তোলা হয়। শীত কালে পালক তোলা যুক্তিযুক্ত নয়। ৫০ টি পূর্নবয়স্ক রাজহাঁস সাড়ে চার কেজি পালক দিতে পারে।

পালক তোলার পর পালক থরিতে পুরে (কাপড়ের) আলো-বাতাসে এবং রোদে শুকোতে হবে। থলিতে ভরার আগে ফর্মালিন দিতে হবে। পালক খুব বেশি দিনের জন্য শকোতে হলে পালকে খুব ভালো করে গ্যামাক্মিন ( ২৫%) দিয়ে ঝেড়ে রেখে দিতে হবে।

লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট।



রাজহাঁস পালন ও তার পরিচর্যা

রাজহাঁস পালন ও তার পরিচর্যা

রাজহাঁস পালন ও তার পরিচর্যা


কিছু গৃহপালিত পাখি আছে যাদের নিয়ে সরকারি, বেসরকারিভাবে বেশ ঢাক-ঢোল পেটানো হয় তার সুখ্যাতির ও গুণাগুণের জন্য।’মানুষ ও কাকে নিয়ে গেল কান’ শুনেই নিজের কানে হাত না দিয়ে কাকের পেছনে ছুটলো। ফলে কান যেখান থাকবার সেখানেই রইলো। শুধু কাকই যা পালিয়ে গেলো।

আবার কিছু কিছু পশুপাখি আছে যাদের সম্পর্কে সরকার সব সময় মুখ ঘুরিয়ে থাকে। পিঠে নিয়েছি কুলো। যা করবার করো!” ভাব নিয়ে মুখ গোমড়া করে থাকে। কিন্তু ঐ সব উপকারী গৃহপালিত পশুপাখি কারোর তোয়াক্কা না করে ঠিক নিজের কাজ করে যায়। রাজ হাঁস এই ধরনের একটি পাখি।


এ জাতের রাজ হাসে ও আমাদের দেশে খুবই প্রচলিত।রাজহাঁসের সেবামূলক কাজ

কবি বলেছেন- ”কোথায় জলে মরাল চলে। মরালী তার পাছে রে-” রাজহাঁস শুধু শোভাবর্ধন করে না। বাড়ি-ঘর পাহারা দেয়, চোর তাড়ায়। ঘাস কাটার মেশিনের বদলে রাজহাঁস পুষুন, ঘাস সমান করে খেয়ে নেবে।

পোকা-মাকড় খেয়ে জায়গা-জমি ঝকঝকে, তকতকে করে রেখে দেবে।রাজহাঁসের মাংস খাওয়া হয়। ওর পলক দিয়ে লেপ-তোষক, বালিশ তৈরি হয়।ডিম? বছরে খুব কম ডিম দেয়। এই কারণে রাজহাঁস পালনকারী তার ডিম না খেয়ে সেটা থেকে বাচ্চা পয়দা করতেই বেশি উৎসাহী হয়ে থাকেন।


রাজহাঁসের প্রজাতি

রাজহাঁসের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে নিম্ন লিখিত প্রজাতিগুলো সাধারণত দেখা যায়।


টুলুজ


(১) টুলুজ- ভারি প্রজাতির পাখি। ফরাসী দেশের পাখি। ভারি পাখিদের মধ্যে এরাই বেশি ডিম দেয়।তবে সব টুলুজ পাখি ডিমে তা দেয় না। ঠোঁট , পা কমলা রঙের। গলা, পেট এবং লেজ সাদা। পুরুষের ওজন- ১৪ কেজি, স্ত্রী- ৯ কেজি।


এমডেন


(২) এমডেনঃ জামর্নির হ্যানোভারে এই পাখি বেশি দেখতে পাওয়া যায়। ভারি জাতের পাখি। ডিমের সংখ্যা ভালো। অন্য প্রজাতির রাজহাঁস থেকে বেশ ঠান্ডা। ঠোঁট জ্বলজ্বলে কমলা রঙের। পায়ে ধবধবে সাদা পালকে ভরা। পুরুষের ওজন ১৪ কেজি, স্ত্রী ৯ কেজি।


                         চিনা


(৩) চিনাঃ চিনদেশের রাজহাঁস। টুলুজ এবং এমডেন ছাড়া আকারে ছোট। সংখ্যায় বেশি ডিম দেয়। বছরে ৬০ টির মত। ডিমে তা দিতে অভ্যস্ত। দুটি রংয়ের চিনা রাজহাঁস দেখা যায়। খয়েরি এবং সাদা।খয়েরি রঙা চিনা রাজহাঁসের পা কমলা। ঠোঁট, পালকের রঙও খয়েরি। সাদা রঙের রাজহাঁসের ঠোঁট এবং পা উজ্জ্বল কমলা রঙের। গায়ের পালক ধবধবে সাদা।

ওপরের ঠোঁটের গোড়ার চামড়া ফুলের মতো গোল হয়ে থাকে। পুরুষের ওজন ৯ কেজি, নারীর ওজন ৮ কেজি। পাহারাদার হিসেবে চিনা রাজহাঁসের সুখ্যাতি আছে।

এছাড়া আরো কিছু প্রজাতির রাজহাঁস আছে। যেমন আফ্রিকান। অনুমান করা হয় এরা আদিতে ভারতীয়। কেউ বা বলেন চিনা এবং টুলুজের মধ্যে প্রজননের ফলে এদের সৃষ্টি হয়েছিল।


রাজহাঁসের বাসস্থান

রাজহাসের ঘর খোলা-মেলা, বায়ু চলাচলযুক্ত কিন্তু রোদ – বৃষ্টিতে ওদের কষ্ট দেবে না। মেঝে নানা ধরনের হতে পারে- পাকা, শক্ত অথচ কাঁচা ; মোটা তারের জালের এবং বিছানাযুক্ত (লিটার)। পুরুস্তরের বিছানা (ডিপ লিটার) হলে গভীরতা হবে ১৫ সে. মি. বা ৬ ইঞ্চি। বিছানা সবসময় শুকণো থাকা চাই।

ঘরের রক্ষণব্যবস্থা ভালো হওয়া চাই। অর্থাৎ যাতে চোর না ঢোকে। শেয়াল বা অন্য কোন বন্যপ্রানী এদের ক্ষতি না করে।

ঘরের সামনে বা পিছনে কিছুটা জায়গা তারের জাল দিয়ে ঘিরে দিলে ভাল হয়। এই জায়গাটা ওদের বিচরনের (জঁহ)কাজে আসবে। এই ধরনের জায়গা হাঁস পিছু ৪ বর্গ মিটার দিতে হবে।

রাজহাঁসের ঘরের মধ্যে এবং বাইরে তিনটি হাঁস পিছু একটি করে ডিম পাড়ার বাক্স দিতে হবে। বাক্সে মাপ হবে ৫০ বর্গ সেঃ মিঃ। পানি ও খাবার জন্য আলাদা পাত্র দিতে হবে।

রাজহাঁসের প্রজনন করাতে চাইলে পদ্ধতিগতভাবে এগুতে হবে। যেমন- ভারি জাতের ৩/৪ টি মাদি হাঁস পিছু একটি মর্দা হাঁস রাখতে হবে। চিনে হাঁসের ৪/৫টি মাদির পিছু একটি মর্দ হাঁস রাখতে হবে।

রাজহাঁসদের এক বছর বয়স না হলে প্রজনন কাজে ব্যবহার না করাই ভাল।সবচেয়ে ভাল হয় যদি ওদের দু’বছর বয়সে প্রজনন কাজে লাগানো যায়।

মার্দি হাঁস ১৫ বছর পর্যন্ত প্রজননক্ষম থাকে কিন্তু মর্দা সাত বছরে প্রজননে কিছুটা বা অক্ষম হয়ে পড়ে।


ডিম ও ডিম ফোটানো

সাধারনত এরা বসন্ত কালে ডিম দিতে শুরু করে। চিনে রাজহাঁস শুরু করে শীতকালে। এরা সকালের দিকেই ডিম দেয়। প্রথম বছরের তুলনায় এরা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে বেশি ডিম দিয়ে থাকে ২য় এবং তয় বছরের ডিম আকারে ও বেশ বড় হয়ে থাকে।শঙ্কর জাতীয় রাজহাঁস অর্থাৎ অক্সিকান রাজহাঁস বা চিনে এবং টুলুজ বা এমডেনের যৌন সঙ্গমে তৈরি সঙ্কর রাজহাঁস এমডেন বা টুলুজ চিনে রাজহাঁসদের চেয়ে বেশি ডিম দেবে।


ডিমে তা দেওয়া

রাজহাঁস নিজের ডিম ফুটিয়ে থাকে। এবং যখন ডিমে তা দেয় তখন ডিম পাড়া বন্ধ রাখে। সুবিধা থাকলে আপনি টার্কি মুরগি, বা মস্কোডি হাঁস দিয়ে রাজহাঁসের ডিম ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে পারেন।

টাটকা ডিম ( খুব জোর সাত দিনের পুরানো), পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, কোন ফাটাফুটো নেই এবং প্রতিটি ডিমের ১৪০ – ২০০ গ্রাম ওজন হলে সেটা তা দেবার উপযুক্ত বলে ধরা যেতে পারে।

অনেক জায়গায় মুরগি দিয়েও রাজহাঁসের ডিম ফোটানো হয়ে থাকে। যদি মুরগি দিয়ে রাজহাঁসের ডিম ফোটাতে হয় তবে মুরগি প্রতি ৪/৬ টি ডিম এবং রাজহাঁস দিয়ে বসালে রাজহাঁস পিছু ১০-১৫ টি ডিম বসাতে হবে। মুরগির নিচে যদি রাজহাঁসের ডিম বসানো হয় তবে ডিম ঘোরানোর ব্যবস্থা খামারকারীকে নিজেই করতে হবে। কারন ডিম বড় আকারের বলে মুরগি রাজহাঁসের ডিম ঘোরাতে পারে না।

মুরগি যখন খাবার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে যাবে তখনই ডিম ঘুরিয়ে দিতে হবে। প্রতিদিনই নিজে থেকে এই কাজ করতে হবে। ১৫ দিনের ডিম ঘোরানোর সময় কিছুটা গরম পানি ডিমের গায়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। অবশ্য রাজহাঁসের পানিতে বিচরণ করার সুবিধা থাকলে গরম পানি না ছিটিয়ে দিলে ও চলবে।


কৃত্রিম ডিম ফোটানো

ডিম ফোটানো মেশিনে ( ইনকিউবেটার) ডিম ফোটানোর হার বেশ কম। মাত্র শতকরা ৪০ ভাগ। মেশিনে ডিম বসালে তাপমাত্রা সবসময় ৩৭.৪০ সেঃ (৯৯.৫০ ফাঃ) রাখবেন। ভেজা থার্মোমিটারে তাপ রাখতে হবে ৩২.২০ সেঃ ২৯ দিন পর্যন্ত। তারপর একে বাড়িয়ে করতে হবে ৩৪০ সেঃ। ডিমগুলি দিনে বার বার ঘুরিয়ে দিতে হবে। আর সব পাখির বেলায় যেটা চলে, এখানে ও তাই _ ডিমের মোটা দিকটা ওপরে রেখে দিতে হবে।

দশ দিনের পরের থেকে ডিমগুলিকে গরম পানি সপ্রে করে দিতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন করে। ২৬ দিনের ডিমগুলিকে নার্সারি ট্রে বা পালক ট্রেতে নিয়ে যেতে হবে। ২৮ দিন হাল্কা জাতের রাজহাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে যায়। আবার এটাও দেখা গেছে ভারি জাতের রাজহাঁসের ডিম ফুটতে ৩৫ দিন সময় লাগছে। ডিম বসানোর দশ দিনের দিন আলোর সামনে ডিম ঘুরিয়ে ঝুঝে নেওয়া যায় ভ্রূণ হয়েছে রাজহাঁসের একদিনের বাচ্চার লিঙ্গ নির্ণয়ঃ মুরগির বাচ্চার মতো রাজহাঁসের বাচ্চার ও একদিনে বলে দেওয়া যায় কোনটা মাদি আর কোনটা মদ্দা।


রাজ হাঁস এর বাচ্চা প্রতিপালনরাজহাঁসের বাচ্চা প্রতিপালন

যদি মুরগি বা রাজহাঁস ডিমে তা দিয়ে ডিম ফুটিয়ে থাকে তবে সেই পালিকা মুরগি বা রাজহাঁস ডিম ফোটা বাচ্চাদের যত্ন করবে। সেখানে কৃত্রিম তাপের কোনো দরকার পড়বে না। তবে পালিকা মা বাচ্চা নিয়ে যে জায়গায় ঘুরে বেড়াবে সে জায়গাটা অবশ্যই শুকনো খটখটে হওয়া চাই।

তবে দশদিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চাসহ পালিকা মাকে নরম ঘাসে ছাওয়া উঠোন জাতীয় জায়গায় রাখা উচিত। লনের মাপ হবে ১০ টি বাচ্চার জন্য পালিকা মা সহ ৪ বর্গমিটার । ১৫ দিন বয়স না হলে বাচ্চাদের পানিতে নামনো মুক্তিযুক্তি নয়।

যদি ইনকিউবেটর মেশিনে ডিম ফোটানো হয় তবে রু্রডারের নিচে রেখে অবশ্যই বাচ্চাদের কৃত্রিমভবে তাপ দিতে হবে।

প্রথম সপ্তাহে ব্রুডারের নিচে ৩০ ডি. সেঃ তাপ থাকা উচিত। সপ্তাহ পিছু ৫ ডি. সেঃ তাপ কমিয়ে ঘরের তাপে অর্থাৎ পরিবেশের তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে।

প্রথম তিনদিন বাচ্চাদের ধরে খাওয়াতে হবে। তারপর থেকে এরা নিজেরাই খেতে পারবে। বাচ্চারা সহজে ঘাসে চড়ে খেতে পারে। ফলে তৈরি খাবার কম লাগে। একসঙ্গে একটি দলে ১০০ টির বেশি বাচ্চা পালন না করাই উচিত।


রাজ হাঁস এর বাচ্চাদের খাবার।রাজহাঁসের বাচ্চাদের খাবার

রাজহাঁসের খাবার মোটামুটি হাঁসের খাবারের মতো। তবে প্রথমে চার সপ্তাহ রাজহাঁসের বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে বলে বাচ্চা হাঁসের তুলনায় ওদের খাবারে আমিষের ভাগ বেশি হওয়া দরকার। ভারি জাতের রাজহাঁসের একদিনের বাচ্চার ওজন প্রায় ৮৫ গ্রাম। এবং ৪ সপ্তাহে এর ওজন ১ কেজি ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত।

তাই রাজহাঁসের বাচ্চার প্রথম চার সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত শতকরা ২০ ভাগ আমিষ আছে এমন খাবার এবং অতিরিক্ত নরম কিছু সব্জি বা চরবার ঘাসে ছাওয়া উঠোন দরকার। ৪ সপ্তাহ পরে ১৬% আমিষ যুক্ত খাবার দিলে চলবে।

ঘাসের চারণভুমিতে রাজহাঁসের বাচ্চা ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত ৯ কেজি। খাবার খেয়ে থাকে। ঐ বয়সে খাবারকে মাংসে পরিণত করার হার ২.২ কেজি। খাবার পিছু ১ কেজি মাংস। ১৬ সপ্তাহে ওটা দাঁড়ায় ৩ কেজি। খাবার পিছু ২.১ কেজি মাংস।


প্রজননক্ষম রাজহাঁসের যত্নঃ প্রাপ্তবয়স্ক রাজহাঁসদের প্রজনন ঋতুর আগে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো ভাবে ঘাসে চরতে দিতে হবে। ওদের এই সময় প্রতিদিন ১৬৫ গ্রাম সুষম খাদ্য খেতে দিতে হবে যাতে আমিষের ভাগ থাকবে শতকরা ১৬ ভাগ।


রাজহাঁসের রোগঃ রাজহাঁসের পালন তথা ব্যবসায় এটা একটা মস্ত সুবিধা যে এদের তেমন রোগ-ব্যধি হয় না। রোগের মড়ক নেই বললেই চলে। বাজারে বিক্রি করার বয়স পর্যন্ত মৃতু্যর হার শতকরা ২ ভাগ নয়।

তবে রাজহাঁস পালনে এ সমস্ত রোগের সম্বন্ধে সচেতন হওয়া উচিত _ ককসিডিও _ সিস, কলেরা, কোরাইজ, স্পাইরোকিটোসিস, অপুষ্টিজনিত রোগ।


মানুষের সেবায় রাজহাঁস- পাহারাদিরঃ রাজহাঁস তার পারিপার্শ্বিক প্রতিটি জিনিসের সঙ্গে খুব সহজেই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে এবং সেই সুবাদে যে কোন অপরিচিতি শব্দ, লোকজন, জন্তু, জানোয়ার দেখামাত্র হয়ে পড়ে এবং প্যাঁক-প্যাঁক শব্দ করে আশ পাশের সকলকে তটস্থ করে তোলে। এমনকি প্রবল উত্তেজনায় অনেক সময় আক্রমন পর্যন্ত করে বসে। আগেই বলা হয়েছে সব রাজহাঁসের মধ্যে পাহারাদারি কাজে চীনা রাজহাঁস দক্ষতম।


রাজহাঁসের ডিম এবং মাংস

অনেক দেশে এমন কি আমাদের দেশে ও কিছু কিছু জায়গায় রাজহাঁসের মাংস ও ডিম উপাদেয় খাবার হিসাবে আদর পেয়ে থাকে। ১০ সপ্তাহ বয়সে রাজহাঁস মাংস হিসেবে খাওয়া চলে।এবং সেই সময় ঐ মাংসের ব্যবসা ও ভালো চলে। দশ সপ্তাহ বয়সে রাজহাঁসের ওজন ৪.৫ কেজি হয়।মাংস হিসেবে কাটার আগে রাজহাঁসের পানি ছাড়া সবরকম খাবার খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা আগে। মুরগি কাটার কায়দায় এবং সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রাজহাঁসের জুগুলোর শিরা কেটে দেওয়া হয়। সম্পূর্ন রক্ত বের হয়ে যাবার পর ওর পেট চিরে নাড়িভূড়ি বের করে নেওয়া হয়। পা, মাথা, ঠোঁট, কেটে বাদ দেওয়া হয়। মোটামুটি রাজহাঁস পিছু পালক,মাথা, নাড়ি ভুঁড়ি বাদ দিলে তার দেহের ওনের শতকরা ৭০ ভাগ মাংস পাওয়া যায়।


রাজহাঁসের পালক বিক্রয়

রাজহাঁসের পালক দিয়ে গদি, লেপ, তোষক, তাকিয়া, কুশন এককথায় বসবার এবং হেলান দেবার সব জিনিস তৈরি করা যায়। এই গদিফাদি তৈরির জন্য রাজহাঁসের বুক পিঠ এবং পেটের নরম পালকের খুব চাহিদা।

রাজহাঁসের পালক চাইলে পালক তুলতে হবে রাজহাঁস যখন প্রথম ডিম পাড়া বন্ধ করবে। বছরে তিন থেকে চারবার এই পালক তোলা হয়। শীত কালে পালক তোলা যুক্তিযুক্ত নয়। ৫০ টি পূর্নবয়স্ক রাজহাঁস সাড়ে চার কেজি পালক দিতে পারে।

পালক তোলার পর পালক থরিতে পুরে (কাপড়ের) আলো-বাতাসে এবং রোদে শুকোতে হবে। থলিতে ভরার আগে ফর্মালিন দিতে হবে। পালক খুব বেশি দিনের জন্য শকোতে হলে পালকে খুব ভালো করে গ্যামাক্মিন ( ২৫%) দিয়ে ঝেড়ে রেখে দিতে হবে।

লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট।



রাজহাঁস পালন ও তার পরিচর্যা

Feb 21, 2014

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগলের স্বাস্থ্য পরিচর্যা কীভাবে করতে হবে তা এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছেঃ

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা



ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগলের স্বাস্থ্য পরিচর্যা কীভাবে করতে হবে তা এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছেঃ

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা



ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগলের স্বাস্থ্য পরিচর্যা কীভাবে করতে হবে তা এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছেঃ

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা



ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

ছাগলের স্বাস্থ্য পরিচর্যা কীভাবে করতে হবে তা এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছেঃ

ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা



ছাগল পালনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

যন্ত্রে ছাগলের দুগ্ধ দোহন

এক সাথে ১৮০ টি ছাগল দোহন করা যায় এই পার্লার এ। ইংরেজিতে এই দুগ্ধ দোহন যন্ত কে মিল্কিং পার্লার বলে।


Test Post from ক্ষেতখামার

Test Post from ক্ষেতখামার http://khetkhamaar.info